শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে দালাল চক্রের অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাংবাদিক সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শরীয়তপুর সিভিল সার্জন অফিস সংলগ্ন এলাকায় এ হামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিক সুজন হাসপাতালের সামনে দালালদের কার্যকলাপ ভিডিও ধারণ করতে গেলে নারী দালাল মনি মুক্তা, হালিমা বেগম, কেয়া বেগম ও নাছিমা বেগমের নেতৃত্বে ৫-৬ জন তাকে ঘিরে ফেলেন। তারা সুজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন এবং তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে হামলাকারীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন বলেন, “সকাল ১১টায় আমার সিভিল সার্জন অফিসে মিটিং ছিল। আমি পৌঁছানোর আগেই দেখতে পাই, কয়েকজন নারী দালাল হাসপাতালে আসা রোগীদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে নিম্নমানের ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছেন। ভিডিও করতে গেলে তারা আমার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ও আমাকে হেনস্থা করে।”
প্রসঙ্গত, গত ৮ মে সমকাল পত্রিকায় “সহকারীরাই রোগী ভাগান ক্লিনিকে” শিরোনামে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে সদর হাসপাতালের দালাল চক্রের কার্যক্রম উন্মোচন করা হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই সাংবাদিক সুজন নানা হুমকির সম্মুখীন হন। ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলা ছিল সেই প্রতিবেদন প্রকাশেরই প্রতিশোধ।
এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন মহল তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে দালালদের একটি তালিকা পেয়েছি। তারা রোগীদের হাসপাতালে ঢুকতে না দিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি করানোর জন্য প্রলুব্ধ করে। তালিকা অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং এ ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ কঠোরভাবে দমন করা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি মামলা করে, পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।”